17
ক্ষমা ও অন্যান্য বিষয়ে উপদেশ। 
 1 যীশু তার শিষ্যদের আরও বললেন, “পাপের প্রলোভন আসবে না, এমন হতে পারে না; কিন্তু ধিক তাকে, যার মাধ্যমে তা আসে!  2  এই ছোটদের মধ্যে এক জনকে যদি কেউ পাপের পথে নিয়ে যায়, তবে তার গলায় ভারী পাথর বেঁধে তাকে সমুদ্রে ফেলে দেওয়া বরং তার পক্ষে ভালো।  3  তোমরা নিজেদের বিষয়ে সাবধান থাক। তোমার ভাই যদি পাপ করে, তাকে ধমক দাও; আর সে যদি সেই অন্যায় থেকে মন ফেরায় তবে তাকে ক্ষমা কর।  4  আর যদি সে এক দিনের র মধ্যে সাতবার তোমার বিরুদ্ধে পাপ করে, আর সাতবার তোমার কাছে ফিরে এসে বলে, আমি এই অন্যায় থেকে মন ফেরালাম, তবে তাকে ক্ষমা কর।”  5  আর প্রেরিতরা প্রভুকে বললেন, “আমাদের বিশ্বাস বাড়িয়ে দিন।”  6 প্রভু বললেন, “একটি সরষে দানার মত বিশ্বাস যদি তোমাদের থাকে, তবে, তুমি শিকড়শুদ্ধ উঠে গিয়ে নিজে সমুদ্রে পুঁতে যাও একথা তুঁত গাছটিকে বললে ও তোমাদের কথা মানবে।”  7  আর তোমাদের মধ্যে এমন কে আছে, যার দাস হাল বয়ে কিংবা ভেড়া চরিয়ে মাঠ থেকে এলে সে তাকে বলবে, “তুমি এখনই এসে খেতে বস?  8  বরং তাকে কি বলবে না, আমি কি খাব, তার আয়োজন কর এবং আমি যতক্ষণ খাওয়া দাওয়া করি, ততক্ষণ কোমর বেঁধে আমার সেবাযত্ন কর, তারপর তুমি খাওয়া দাওয়া করবে?  9  সেই দাস আদেশ পালন করল বলে সে কি তার ধন্যবাদ করে?  10  সেইভাবে সব আদেশ পালন করলে পর তোমারও বোলো আমার অযোগ্য দাস, যা করতে বাধ্য ছিলাম, তাই করলাম।” 
যীশু দশ জন কুষ্ঠ রোগীকে সুস্থ করেন। 
 11 যিরুশালেমে যাবার দিনের তিনি শমরিয়া ও গালীল দেশের মধ্যে দিয়ে গেলেন।  12 তিনি কোনো এক গ্রামে ঢুকছেন, এমন দিনের দশ জন কুষ্ঠরোগী তাঁর সামনে পড়ল, তারা দূরে দাঁড়িয়ে চিৎকার করে বলতে লাগল,  13 “যীশু, নাথ, আমাদের দয়া করুন!”  14 তাহাদের দেখে তিনি বললেন, “যাও, যাজকদের কাছে গিয়ে নিজেদের দেখাও। যেতে যেতে তারা শুদ্ধ হল।”  15 তখন তাদের একজন নিজেকে সুস্থ দেখে চিৎকার করে ঈশ্বরের গৌরব করতে করতে ফিরে এলো,  16 এবং যীশুর পায়ের উপর উপুড় হয়ে তাঁর ধন্যবাদ করতে লাগল; সেই ব্যক্তি শমরীয়।  17 যীশু উত্তর করে বললেন, “দশ জন কি শুদ্ধ সুস্থ হয়নি? তবে সেই নয় জন কোথায়?  18  ঈশ্বরের গৌরব করবার জন্য ফিরে এসেছে, এই অন্য জাতির লোকটি ছাড়া এমন কাউকেও কি পাওয়া গেল না?”  19 পরে তিনি তাকে বললেন, “উঠ এবং যাও, তোমার বিশ্বাস তোমাকে সুস্থ করেছে।” 
ঈশ্বরের রাজ্য আসবার বিষয়ে শিক্ষা। 
 20 ফরীশীরা তাঁকে জিজ্ঞাসা করল, “ঈশ্বরের রাজ্য কখন আসবে?” তিনি উত্তর করে তাদের বললেন, “ঈশ্বরের রাজ্য চিহ্নের সাথে আসে না;  21  আর লোকে বলবে না, দেখ, এই জায়গায়! ঐ জায়গায়! কারণ দেখ, ঈশ্বরের রাজ্য তোমাদের মধ্যেই আছে।”  22 আর তিনি শিষ্যদের বললেন, “এমন দিন আসবে, যখন তোমরা মনুষ্যপুত্রের রাজত্বের দিনের র এক দিন দেখতে ইচ্ছা করবে, কিন্তু দেখতে পাবে না।  23  তখন লোকেরা তোমাদের বলবে, দেখ, ঐ জায়গায়! দেখ, এই জায়গায়! যেও না, তাদের পিছনে পিছনে যেও না।  24  কারণ বিদ্যুৎ যেমন আকাশের নীচে এক দিক থেকে চমকালে, আকাশের নীচে অন্য দিক পর্যন্ত আলোকিত হয়, মনুষ্যপুত্র নিজের দিনের সেরূপ হবেন।  25  কিন্তু প্রথমে তাঁকে অনেক দুঃখভোগ করতে এবং এই দিনের র লোকরা তাঁকে অগ্রাহ্য করবে।  26  আর নোহের দিনের যেমন হয়েছিল, মনুষ্যপুত্রের দিনের ও তেমনি হবে।  27  লোকে খাওয়া দাওয়া করত, বিবাহ করত, বিবাহিতা হত, যে পর্যন্ত না নোহ জাহাজে প্রবেশ করলেন, আর জলপ্লাবন এসে সবাইকে ধ্বংস করল।  28  সেইভাবে লোটের দিনের যেমন হয়েছিল লোকে খাওয়া দাওয়া, কেনাবেচা, গাছ লাগানো ও বাড়ি তৈরী করত;  29  কিন্তু যেদিন লোট সদোম থেকে বাইরে গেলেন, সেই দিন আকাশ থেকে আগুনও গন্ধকের বৃষ্টি পড়ে সবাইকে ধ্বংস করল  30  মনুষ্যপুত্র যেদিন প্রকাশিত হবেন, সে দিনের ও এই রকমই হবে।  31  সেই দিন যে কেউ ছাদের উপরে থাকবে, আর তার জিনিসপত্র ঘরে থাকবে, সে তা নেবার জন্য নীচে না নামুক; আর তেমনি যে কেউ মাঠে থাকবে, সেও ফিরে না আসুক।  32  লোটের স্ত্রীর কথা মনে কর।  33  যে কেউ নিজের প্রাণ লাভ করতে চেষ্টা করে, সে তা হারাবে; আর যে কেউ প্রাণ হারায়, সে তা বাঁচাবে।  34  আমি তোমাদের বলছি, সেই রাত্রিতে দুজন এক বিছানায় থাকবে, তাদের মধ্যে থেকে এক জনকে নেওয়া হবে এবং অন্য জনকে ফেলে যাওয়া হবে।  35  দুটি স্ত্রীলোক একসাথে যাঁতা পিষবে; তাদের মধ্যে থেকে এক জনকে নেওয়া হবে এবং অন্য জনকে ফেলে যাওয়া হবে।”  36 তখন তারা উত্তর করে তাঁকে বললেন,  37 “হে প্রভু, কোথায়?” তিনি তাদের বললেন, “যেখানে মৃতদেহ, সেখানেই শকুন জড়ো হয়।”