2
প্রভু যীশু পাপ ক্ষমাও করতে পারেন।
1 কয়েক দিন পরে যীশু আবার কফরনাহূমে চলে আসলে, সেখানকার মানুষেরা শুনতে পেল যে, তিনি ঘরে আছেন।
2 আর এত লোক তাঁর কাছে জড়ো হলো যে, দরজার কাছেও আর জায়গা ছিল না। আর তিনি তাদের কাছে ঈশ্বরের বাক্য শিক্ষা দিতে লাগলেন।
3 তখন চারজন লোক একজন পক্ষাঘাতী রোগীকে বয়ে তাঁর কাছে নিয়ে যাচ্ছিল।
4 কিন্তু সেখানে ভিড় থাকায় তাঁর কাছে আসতে না পেরে, তিনি যেখানে দাঁড়িয়ে ছিলেন, সেই জায়গায় ছাদ খুলে ফেলে এবং ছিদ্র করে যে খাটে পক্ষাঘাতী রুগী শুয়েছিল সে খাটটাকে নামিয়ে দিল।
5 তাদের বিশ্বাস দেখে যীশু সেই পক্ষাঘাতী রোগীকে বললেন, পুত্র, তোমার পাপ ক্ষমা করা হল।
6 কিন্তু সেখানে কয়েকজন ধর্মশিক্ষকরা বসেছিলেন; তারা হৃদয়ে এই রকম তর্ক করতে লাগলেন,
7 এ মানুষটি এই রকম কথা কেন বলছে? এ যে ঈশ্বরনিন্দা করছে; সেই একজন, অর্থাৎ ঈশ্বর ছাড়া আর কে পাপ ক্ষমা করতে পারে?
8 তারা মনে মনে এই রকম চিন্তা করছে, এটা যীশু তখনই নিজ আত্মাতে বুঝতে পেরে তাদের বললেন, “তোমরা হৃদয়ে এমন চিন্তা কেন করছ?”
9 পক্ষাঘাতী রোগীক কোনটা বলা সহজ, তোমার পাপ ক্ষমা করা হল বলা, না ওঠ তোমার বিছানা তুলে হেঁটে বেড়াও বলা?
10 কিন্তু পৃথিবীতে পাপ ক্ষমা করতে মনুষ্যপুত্রের ক্ষমতা আছে, এটা যেন তোমরা জানতে পার, এই জন্য তিনি সেই পক্ষাঘাতী রোগীকে বললেন।
11 তোমাকে বলছি, ওঠ, তোমার মাদুর তুলে নিয়ে তোমার ঘরে যাও।
12 তাতে সে উঠে দাঁড়াল ও সেই মুহূর্তে খাট তুলে নিয়ে সবার সামনে দিয়ে বাইরে চলে গেল; এতে সবাই খুব অবাক হল, আর এই বলে ঈশ্বরের গৌরব করতে লাগল যে, এরকম কখনও দেখেনি।
প্রভু যীশুর বিভিন্ন অলৌকিক কাজ ও শিক্ষা। লেবীর আহ্বানও সেই সমন্ধে যীশুর শিক্ষা।
13 পরে তিনি আবার বের হয়ে সমুদ্রতীরে চলে গেলেন এবং সব লোক তাঁর কাছে উপস্থিত হলো, আর তিনি তাদের শিক্ষা দিতে লাগলেন।
14 পরে তিনি যেতে যেতে দেখলেন, আলফেয়ের ছেলে লেবী কর আদায় করবার জায়গায় বসে আছেন; তিনি তাঁকে বললেন, “আমার সঙ্গে এস,” তাতে তিনি উঠে তাঁর সঙ্গে চলে গেলেন।
15 পরে তিনি যখন তাঁর ঘরের মধ্যে খাবার খেতে বসলেন, আর অনেক কর আদায়কারী ও পাপী মানুষ যীশুর ও তাঁর শিষ্যদের সঙ্গে খাবার খেতে বসল; কারণ অনেক লোক যীশুর সঙ্গে সঙ্গে যাচ্ছিল।
16 কিন্তু তিনি পাপী ও কর আদায়কারীদের সঙ্গে খাবার খাচ্ছেন দেখে ফরীশীদের ধর্মশিক্ষকেরা তাঁর শিষ্যদের বললেন উনি কেন কর আদায়কারী ও পাপীদের সঙ্গে খাওয়া দাওয়া করেন?
17 যীশু তা শুনে তাদেরকে বললেন, সুস্থ লোকদের ডাক্তারের প্রয়োজন নেই, কিন্তু অসুস্থদের প্রয়োজন আছে; আমি ধার্ম্মিকদের নয়, কিন্তু পাপীদেরই ডাকতে এসেছি।
উপবাস বিষয়ে যীশুর শিক্ষা।
18 আর যোহনের শিষ্যেরা ও ফরীশীরা উপবাস করছিল। তারা যীশুর কাছে এসে তাঁকে বলল, যোহনের শিষ্যেরা ও ফরীশীদের শিষ্যরা উপবাস করে, কিন্তু আপনার শিষ্যেরা উপবাস করে না, এর কারণ কি?
19 যীশু তাদের বললেন, বর সঙ্গে থাকতে কি বরের সঙ্গে থাকা লোকেরা কি উপবাস করতে পারে? যতদিন তাদের সঙ্গে বর থাকে, ততদিন তারা উপবাস করতে পারে না।
20 কিন্তু এমন দিন আসবে, যখন তাদের কাছ থেকে বরকে নিয়ে যাওয়া হবে; সেদিন তারা উপবাস করবে।
21 পুরনো কাপড়ে কেউ নতুন কাপড়ের তালী দেয় না, কারণ তার তালীতে কাপড় ছিঁড়ে যায় এবং ছেঁড়াটা আরও বড় হয়।
22 আর লোকে পুরাতন চামড়ার থলিতে নতুন আঙুরের রস রাখে না; রাখলে চামড়ার থলিগুলি ফেটে যায়, তাতে দ্রাক্ষারস পড়ে যায়, চামড়ার থলিগুলিও নষ্ট হয়; কিন্তু লোকে নূতন চামড়ার থলিতে টাটকা দ্রাক্ষারস রাখে।
বিশ্রামবারের বিষয়ে যীশুর শিক্ষা।
23 আর যীশু বিশ্রামবারে শস্য ক্ষেতের মধ্য দিয়ে যাচ্ছিলেন এবং তাঁর শিষ্যেরা চলতে চলতে শীষ ছিঁড়ে খেতে লাগলেন।
24 এতে ফরীশীরা তাঁকে বলল, দেখ, বিশ্রামবারে যা করা উচিত না তা ওরা কেন করছে?
25 তিনি তাদের বললেন, দায়ূদ ও তাঁর সঙ্গীদের খিদে পেলে তিনি কি করেছিলেন, সেটা কি তোমরা পড়নি?
26 দায়ূদ অবিয়াথর মহাযাজকের দিন ঈশ্বরের ঘরের ভিতর ঢুকে যে, দর্শনরুটি যাজকরা ছাড়া আর অন্য কারও খাওয়া উচিত ছিল না, তাই তিনি খেয়েছিলেন এবং সঙ্গীদেরকেও দিয়েছিলেন।
27 তিনি তাদের আরও বললেন, “বিশ্রামবার মানুষের জন্যই সৃষ্টি হয়েছে, মানুষ বিশ্রামবারের জন্য না,”
28 সুতরাং মনুষ্যপুত্র বিশ্রামবারের কর্তা।