28
ইফ্রয়িম ও যিহূদার নেতাদের ধিক্কার
1 ইফ্রয়িমের মত্ত ব্যক্তিদের অহংকার, সেই মুকুটকে ধিক্,
যে ফুলের শোভা ও যার মহিমার সৌন্দর্য ম্লান হয়ে যাচ্ছে,
যা এক উর্বর উপত্যকার মাথায় অবস্থিত,
সেই নগর, যাদের অহংকার সুরার কারণে অবনমিত হয়েছে!
2 দেখো, প্রভুর এক পরাক্রমী ও শক্তিশালী ব্যক্তি আছেন।
শিলাবৃষ্টি ও ধ্বংসাত্মক ঝড়ের মতো,
মুষলধারায় বৃষ্টি ও প্লাবনকারী বারিধারার মতো,
তিনি একে সবলে মাটিতে নিক্ষেপ করবেন।
3 সেই মুকুট, যা ইফ্রয়িমের মত্ত ব্যক্তিদের গর্ব,
পায়ের নিচে দলিত হবে।
4 সেই ম্লানপ্রায় ফুল, তার মহিমার সৌন্দর্য,
যা এক উর্বর উপত্যকার মাথায় অবস্থিত,
যা চয়ন করার আগে পাকা ডুমুরের মতো হবে—
তাকে দেখামাত্র যেমন কেউ তা পেড়ে হাতে নেয়,
আর তা খেয়ে ফেলে, তেমনই।
5 সেইদিন, বাহিনীগণের সদাপ্রভু
এক গৌরবের মুকুটস্বরূপ হবেন,
তাঁর প্রজাদের অবশিষ্টাংশের জন্য
তিনি হবেন এক সুন্দর শিরোভূষণ।
6 যিনি বিচারকের আসনে বসেন,
তিনি তাঁকে ন্যায়বিচারের প্রেরণা দেবেন,
যারা নগর-দুয়ারে আক্রমণ রোধ করে,
তিনি হবেন তাদের কাছে শক্তির উৎস।
7 এরাও সুরার কারণে টলোমলো হয়
এবং সুরা পানের কারণে এলোমেলো চলে:
যাজকেরা ও ভাববাদীরা সুরা পান করে টলোমলো হয়
সুরা পান করে তারা চুর হয়ে থাকে;
তারা সুরা পানের জন্য এলোমেলো চলে,
দর্শন দেখামাত্র তারা টলটলায়মান হয়,
সিদ্ধান্ত গ্রহণের সময় তারা হোঁচট খায়।
8 খাবারের সব টেবিল বমিতে পূর্ণ,
নোংরা নয়, এমন কোনো স্থান নেই।
9 “সে কাকে শিক্ষা দিতে চাইছে?
কার কাছে সে তার বার্তার ব্যাখ্যা করছে?
সেই শিশুদের কাছে কি, যাদের স্তন্যপান ত্যাগ করানো হচ্ছে,
না তাদের কাছে, যাদের স্তন থেকে সরানো হচ্ছে?
10 কারণ, এ যেন:
এরকম করো, সেইরকম করো,
নিয়মের উপরে নিয়ম, তার উপরে নিয়ম,* 28:10 হিব্রু: সাব লাসাব সাব লাসাব, কাব লাকাব কাব লাকাব (সম্ভবত, ছোটো বাচ্চাদের দ্বারা উচ্চারিত অর্থহীন শব্দ; আবার ভাববাদীদের বাণীর ব্যঙ্গ করে নকল করা অর্থও হতে পারে)। এরকম 13 পদেও।
এখানে একটু আর ওখানে একটু।”
11 তাহলে ভালোই তো, বিদেশি ওষ্ঠাধর ও অদ্ভুত ভাষার দ্বারা
ঈশ্বর এই জাতির সঙ্গে কথা বলবেন।
12 যাদের কাছে তিনি বলেছেন,
“এই হল বিশ্রামের স্থান, ক্লান্ত ব্যক্তি এখানে বিশ্রাম করুক”
এবং “এই হল প্রাণ জুড়ানোর স্থান”—
কিন্তু তারা তা শুনতে চাইলো না।
13 সেই কারণে, সদাপ্রভুর বাণী তাদের কাছে এরকম হল:
এরকম করো, সেইরকম করো,
নিয়মের উপরে নিয়ম, তার উপরে নিয়ম,
এখানে একটু আর ওখানে একটু—
যেন তারা যায় ও পিছন দিকে পড়ে,
আহত হয়ে ফাঁদে পড়ে ও ধৃত হয়।
14 সেই কারণে নিন্দুকেরা ও জেরুশালেমে স্থিত এই জাতির শাসকেরা,
তোমরা সদাপ্রভুর বাণী শোনো।
15 তোমরা অহংকার করে বলো, “আমরা মৃত্যুর সঙ্গে একটি সন্ধিচুক্তি করেছি,
কবরের সঙ্গে আমাদের একটি নিয়ম হয়েছে।
যখন কোনো অপ্রতিরোধ্য কশা আছড়ে পড়ে,
তা আমাদের স্পর্শ করতে পারবে না,
কারণ এক মিথ্যাকে আমরা আশ্রয়স্থল করেছি,
আর মিথ্যাচারই† 28:15 বা ভ্রান্ত দেবতারা। হল আমাদের লুকানোর স্থান।”
16 তাই সার্বভৌম সদাপ্রভু একথা বলেন:
“দেখো, আমি সিয়োনে এক পাথর স্থাপন করি, সেটি এক পরীক্ষিত পাথর,
সুদৃঢ় ভিত্তির জন্য তা এক মহামূল্যবান কোণের পাথর;
যে বিশ্বাস করে,
সে কখনও আতঙ্কগ্রস্ত হবে না।
17 আমি ন্যায়বিচারকে মানদণ্ড
ও ধার্মিকতাকে করব ওলন-দড়ি;
শিলাবৃষ্টি তোমাদের আশ্রয়স্থান, অর্থাৎ মিথ্যাচারকে ভাসিয়ে নিয়ে যাবে,
আর জল তোমার লুকানোর স্থানের উপর দিয়ে বইবে।
18 মৃত্যুর সঙ্গে কৃত তোমাদের সন্ধিচুক্তি বাতিল করা হবে;
কবরের সঙ্গে তোমাদের চুক্তিনিয়ম স্থির থাকবে না।
যখন সেই অপ্রতিরোধ্য কশা আছড়ে পড়বে,
তোমরা তার দ্বারা প্রহারিত হবে।
19 যেই তা আসবে, তা তোমাদের বহন করে নিয়ে যাবে;
সকালের পর সকাল, দিনে বা রাত্রে,
তা ক্রমাগত আছড়ে পড়বে।”
এই বার্তা বুঝতে পারলে
তা প্রচণ্ড বিভীষিকা নিয়ে আসবে।
20 পা ছড়ানোর জন্য বিছানা ভীষণ খাটো,
তোমাদের গায়ে জড়ানোর জন্য কম্বলও ছোটো।
21 সদাপ্রভু উঠে দাঁড়াবেন, যেমন পরাসীম পর্বতে করেছিলেন,
গিবিয়োনের উপত্যকায় যেমন করেছিলেন, তেমনই তিনি নিজেকে তুলে ধরবেন,
যেন তিনি তাঁর কাজ করতে পারেন, তাঁর অদ্ভুত কাজ,
তাঁর করণীয় কাজ সম্পন্ন করেন, তাঁর রহস্যময় সেই করণীয় কাজ।
22 এখন তোমাদের ঠাট্টা-বিদ্রুপ করা বন্ধ করো,
নইলে তোমাদের শৃঙ্খল আরও ভারী হবে;
প্রভু, সর্বশক্তিমান সদাপ্রভু আমাকে বলেছেন,
সমস্ত দেশের বিরুদ্ধে ধ্বংসের পরোয়ানা জারি হয়ে গেছে।
23 তোমরা শোনো ও আমার কথায় কান দাও;
মনোযোগ দাও ও আমি যা বলি তা শোনো।
24 কৃষক যখন বীজ বপনের জন্য জমি চাষ করে, সে কি তা চাষ করেই যায়?
সে কি ক্রমাগত পাথর ভাঙ্গে ও মাটিতে মই দেয়?
25 সে যখন ভূমির উপরিভাগ সমান করে,
সে কি মৌরি ও জিরের বীজ বোনে না?
সে কি যথাস্থানে গম ও যব
ও খেতের সীমানায় ভুট্টা
যথা উপায়ে বপন করে না?
26 তার ঈশ্বর তাকে নির্দেশ দেন
ও তাকে যথার্থ নিয়মের শিক্ষা দেন।
27 মৌরি হাতগাড়ির দ্বারা মাড়াই করা হয় না,
জিরের উপরে গোরুগাড়ির চাকাও চালানো হয় না;
মৌরি লাঠি দিয়ে পেটানো হয়,
জিরে একটি ছড়ির দ্বারা।
28 রুটি তৈরি করার জন্য গম অবশ্যই চূর্ণ করতে হয়,
তাই কেউই গম অনবরত মাড়াই করে না।
যদিও মাড়াই করা গাড়ির চাকা তার উপরে চালানো হয়,
ঘোড়ার খুরে তা কিন্তু চূর্ণ হয় না।
29 এই সমস্ত জ্ঞান আসে সর্বশক্তিমান সদাপ্রভুর কাছ থেকে,
যাঁর পরিকল্পনা অপূর্ব,
যাঁর প্রজ্ঞা চমৎকার।