যাত্রা পুস্তক. 28. “ইস্রায়েলীদের মধ্যে থেকে তোমার দাদা হারোণকে এবং তার ছেলে নাদব ও অবীহূ, ইলীয়াসর ও ঈথামরকে তোমার কাছে ডেকে আনো, যেন তারা যাজকরূপে আমার সেবা করতে পারে। তোমার দাদা হারোণকে মর্যাদা ও সম্মান দিতে তার জন্য পবিত্র পোশাক তৈরি কোরো। যাদের আমি এই বিষয়ে প্রজ্ঞা দিয়েছি, সেইসব দক্ষ কারিগরকে বোলো, তারা যেন হারোণের জন্য, তার অভিষেকের জন্য পোশাক তৈরি করে, সে যেন যাজকরূপে আমার সেবা করতে পারে। এইসব পোশাক-পরিচ্ছদ তারা তৈরি করবে: একটি বুকপাটা, একটি এফোদ, একটি আলখাল্লা, হাতে বোনা একটি নিমা, একটি পাগড়ি ও একটি উত্তরীয়। তোমার দাদা হারোণ ও তার ছেলেদের জন্য তাদের এইসব পবিত্র পোশাক-পরিচ্ছদ তৈরি করতে হবে, যেন তারা যাজকরূপে আমার সেবা করতে পারে। তাদের সোনা, ও নীল, বেগুনি ও টকটকে লাল রংয়ের সুতো এবং মিহি মসিনা ব্যবহার করতে দিয়ো। “সোনা, এবং নীল, বেগুনি ও টকটকে লাল রংয়ের সুতো এবং মিহি পাকান মসিনা দিয়ে এফোদটি তৈরি কোরো—যা দক্ষ হস্তকলা হবে। এতে কোণাগুলির সাথে যুক্ত দুটি কাঁধ-পটি থাকবে, যেন এফোদটি বেঁধে রাখা যায়। দক্ষতার সাথে বোনা এটির কোমরবন্ধটিও এরই মতো হবে—এটি এফোদের সাথেই জুড়ে থাকা একই ভাগ হবে এবং সোনা, ও নীল, বেগুনি ও টকটকে লাল রংয়ের সুতো এবং মিহি পাকান মসিনা দিয়ে তৈরি করা হবে। “তুমি দুটি স্ফটিকমণি নাও এবং সেগুলির উপর ইস্রায়েলের ছেলেদের নাম খোদাই করে দাও। তাদের জন্মের ক্রমানুসারে—একটি মণিতে ছয়টি নাম এবং অন্যটিতে বাকি ছয়টি নাম খোদাই করো। যেভাবে একজন রত্নশিল্পী একটি সিলমোহর খোদাই করে, সেভাবেই সেই মণি দুটিতে ইস্রায়েলের ছেলেদের নামগুলি খোদাই করে দিয়ো। পরে মণিগুলি সোনার তারের সূক্ষ্ম কারুকার্য করা ঝালরে চড়িয়ে দিয়ো এবং ইস্রায়েলের ছেলেদের জন্য স্মরণার্থক মণিরূপে সেগুলি সেই এফোদের কাঁধ-পটিগুলিতে বেঁধে দিয়ো। সদাপ্রভুর সামনে এক স্মারকরূপে হারোণ তার কাঁধে সেই নামগুলি বহন করবে। সোনার তারের সূক্ষ্ম কারুকার্য করা ঝালর এবং খাঁটি সোনা দিয়ে দড়ির মতো দেখতে দুটি পাতা-কাটা শিকল তৈরি কোরো, ও সেই শিকলটি ঝালরে জুড়ে দিয়ো। “সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য একটি বুকপাটা গড়ে দিয়ো—যা হবে দক্ষ হস্তকলা। এটিকে এফোদের মতো করেই: সোনা, ও নীল, বেগুনি ও টকটকে লাল রংয়ের সুতো এবং মিহি পাকান মসিনা দিয়ে তৈরি কোরো। এটি বর্গাকার, 23 সেন্টিমিটার লম্বা ও চওড়া হবে এবং তা দুই ভাঁজ করে রাখতে হবে। পরে এটির উপর মূল্যবান মণিরত্নের চারটি সারি চড়িয়ে দিয়ো। প্রথম সারিতে থাকবে চুণী, গোমেদ ও পান্না; দ্বিতীয় সারিতে থাকবে ফিরোজা, নীলা ও পান্না; তৃতীয় সারিতে থাকবে নীলকান্তমণি, অকীক ও নীলা; চতুর্থ সারিতে থাকবে পোখরাজ, স্ফটিকমণি ও সূর্যকান্তমণি। এগুলি সোনার তারের সূক্ষ্ম কারুকার্য করা ঝালরে চড়িয়ে দিয়ো। ইস্রায়েলের ছেলেদের এক একজনের নামের জন্য বারোটি মণি থাকবে, প্রত্যেকটি মণির উপরে বারোটি গোষ্ঠীর মধ্যে এক এক গোষ্ঠীর নাম এক সিলমোহরের মতো খোদাই করে দিয়ো। “বুকপাটার জন্য খাঁটি সোনা দিয়ে দড়ির মতো পাতা-কাটা শিকল তৈরি কোরো। এটির জন্য সোনার দুটি আংটা তৈরি করে সেগুলি সেই বুকপাটার দুই কোনায় বেঁধে দিয়ো। সেই বুকপাটার কোনায় থাকা আংটাগুলিতে সোনার সেই শিকল দুটি বেঁধে দিয়ো, এবং সেই শিকলগুলির অন্য প্রান্তগুলি সেই দুটি ঝালরে বেঁধে দিয়ে এফোদের সামনের দিকের কাঁধ-পটিতে জুড়ে দিয়ো। সোনার দুটি আংটা তৈরি করে সেগুলি এফোদের পাশে থাকা ভিতরদিকের বুকপাটার অন্য দুই কোনায় জুড়ে দিয়ো। সোনার আরও দুটি আংটা তৈরি করে সেগুলি এফোদের সামনের দিকের কাঁধ-পটির তলায়, এফোদের কোমরবন্ধের ঠিক উপরে, দুই প্রান্তের জোড়ের কাছে জোড়া দিয়ে দিয়ো। বুকপাটার আংটাগুলিকে কোমরবন্ধের সাথে যুক্ত করে নীল দড়ি দিয়ে এফোদের আংটাগুলির সাথে এমনভাবে বেঁধে দিতে হবে, যেন বুকপাটাটি দোল খেয়ে এফোদ থেকে সরে না যায়। “হারোণ যখনই পবিত্রস্থানে প্রবেশ করবে, সদাপ্রভুর সামনে চিরস্থায়ী এক স্মারকরূপে সিদ্ধান্তের সেই বুকপাটায় সে তার হৃদয়ের উপরে ইস্রায়েলের ছেলেদের নামগুলি বহন করবে। এছাড়াও সেই বুকপাটায় ঊরীম ও তুম্মীম রেখো, যেন হারোণ যখনই সদাপ্রভুর উপস্থিতিতে প্রবেশ করে, সেগুলি তার হৃদয়ের উপরেই থেকে যায়। এইভাবে হারোণ সবসময় সদাপ্রভুর সামনে ইস্রায়েলীদের জন্য সিদ্ধান্ত গ্রহণের সাধন তার বুকের উপরে বয়ে বেড়াবে। “এফোদের আলখাল্লাটি আগাগোড়াই নীল কাপড় দিয়ে তৈরি করে, মাথা ঢোকানোর জন্য মাঝখানে একটি ফাঁক রেখো। এই ফাঁকের চারপাশে গলাবন্ধের মতো হাতে বোনা একটি ধারি থাকবে, যেন এটি ছিঁড়ে না যায়। সেই আলখাল্লার আঁচলের চারপাশে নীল, বেগুনি ও টকটকে লাল রংয়ের সুতো দিয়ে ডালিম তৈরি করে, সেগুলির মাঝে মাঝে সোনার ঘণ্টা ঝুলিয়ে দিয়ো। সোনার ঘণ্টা ও ডালিমগুলি আলখাল্লার আঁচলের চারপাশে পর্যায়ক্রমে বসানো থাকবে। পরিচর্যা করার সময় হারোণকে অবশ্যই এটি পরে থাকতে হবে। সে যখন পবিত্রস্থানে সদাপ্রভুর সামনে প্রবেশ করবে এবং যখন সে বাইরে বেরিয়ে আসবে, তখন সেই ঘণ্টার শব্দ শোনা যাবে, যেন সে মারা না যায়। “খাঁটি সোনা দিয়ে একটি ফলক তৈরি করে তাতে সিলমোহরের মতো করে খোদাই করে দিয়ো: সদাপ্রভুর উদ্দেশে পবিত্র। এটিকে পাগড়ির সাথে জুড়ে রাখার জন্য এতে একটি নীল সুতো বেঁধে দিয়ো; এটি পাগড়ির সামনের দিকে থাকবে। এটি হারোণের কপালের উপরে থাকবে, এবং সে ইস্রায়েলীদের উৎসর্গ করা পবিত্র নৈবেদ্যগুলির সাথে যুক্ত অপরাধ বহন করবে, তাদের নৈবেদ্যগুলি যাই হোক না কেন। অবিচ্ছিন্নভাবে এটি হারোণের কপালে থাকবে যেন তারা সদাপ্রভুর কাছে গ্রাহ্য হয়। “মিহি মসিনা দিয়ে নিমা বুনো এবং পাগড়িও তৈরি কোরো। উত্তরীয়টি হবে দক্ষ এক সূচিশিল্পীর হস্তকলা। হারোণের ছেলেদের মর্যাদা ও সম্মান দিতে তাদের জন্য নিমা, উত্তরীয় ও টুপি তৈরি কোরো। তোমার দাদা হারোণ ও তার ছেলেদের এইসব পোশাক পরিয়ে দেওয়ার পর তুমি তাদের অভিষিক্ত ও নিযুক্ত কোরো। তাদের পবিত্র কোরো যেন তারা যাজকরূপে আমার সেবা করতে পারে। “শরীর ঢেকে রাখার জন্য মসিনা দিয়ে অন্তর্বাস তৈরি কোরো, যা কোমর থেকে ঊরু পর্যন্ত বিস্তৃত থাকবে। হারোণ ও তার ছেলেরা যখনই সমাগম তাঁবুতে প্রবেশ করবে বা পবিত্রস্থানে পরিচর্যা করার জন্য বেদির নিকটবর্তী হবে, তখনই তাদের সেগুলি পরতে হবে, যেন তারা অপরাধের ভাগী হয়ে মারা না যায়। “হারোণ ও তার বংশধরদের জন্য এটি চিরস্থায়ী এক বিধি হবে।