যাত্রা পুস্তক. 37. বৎসলেল বাবলা কাঠ দিয়ে 1.1 মিটার লম্বা, 68 সেন্টিমিটার চওড়া, ও 68 সেন্টিমিটার উঁচু সিন্দুকটি তৈরি করলেন। ভিতরে ও বাইরে, দুই দিকেই তিনি সেটি খাঁটি সোনা দিয়ে মুড়ে দিলেন, এবং সেটির চারপাশে সোনা দিয়ে একটি ছাঁচ তৈরি করলেন। সেটির জন্য তিনি সোনার চারটি কড়া ঢালাই করে দিলেন এবং সেগুলি সেটির চারটি পায়ায় বেঁধে দিলেন—দুটি আংটা একদিকে ও দুটি আংটা অন্যদিকে রাখলেন। পরে তিনি বাবলা কাঠ দিয়ে খুঁটি তৈরি করলেন ও সেগুলি সোনা দিয়ে মুড়ে দিলেন। আর সিন্দুকটি বহন করার জন্য তিনি সেটির দুই পাশে রাখা আংটায় খুঁটিগুলি ঢুকিয়ে দিলেন। খাঁটি সোনা দিয়ে তিনি 1.1 মিটার লম্বা ও 68 সেন্টিমিটার চওড়া প্রায়শ্চিত্ত-আচ্ছাদন তৈরি করলেন। পরে তিনি সেই আচ্ছাদনের দুই কিনারায় পিটানো সোনা দিয়ে দুটি করূব তৈরি করলেন। একদিকের কিনারায় তিনি একটি করূব ও অন্যদিকে দ্বিতীয় করূবটি তৈরি করলেন; দুই কিনারায় আবরণ সমেত তিনি সেগুলি অখণ্ডিত রূপ দিয়েই তৈরি করলেন। করূবেরা তাদের ডানাগুলি উপরের দিকে ছড়িয়ে দিয়েছিল, ও সেগুলি দিয়ে আবরণটি আড়াল করে রেখেছিল। করূবেরা পরস্পরের দিকে মুখ করে সেই আবরণের দিকে তাকিয়েছিল। তাঁরা বাবলা কাঠ দিয়ে 90 সেন্টিমিটার লম্বা, 45 সেন্টিমিটার চওড়া ও 68 সেন্টিমিটার উঁচু টেবিলটি তৈরি করলেন। পরে তাঁরা সেটি খাঁটি সোনা দিয়ে মুড়ে দিলেন এবং সেটির চারপাশে সোনার এক ছাঁচ তৈরি করে দিলেন। এছাড়াও তাঁরা সেটির চারপাশে 7.5 সেন্টিমিটার চওড়া একটি চক্রবেড় তৈরি করলেন এবং সেই চক্রবেড়ে সোনার এক ছাঁচ বসিয়ে দিলেন। টেবিলের জন্য তাঁরা সোনার চারটি আংটা ঢালাই করে দিলেন এবং সেগুলি সেই চার কোনায় বেঁধে দিলেন, যেখানে চারটি পায়াও ছিল। টেবিল বহনের উদ্দেশে ব্যবহৃত খুঁটিগুলি ধরে রাখার জন্য সেই কড়াগুলি চক্রবেড়ের কাছাকাছি রাখা হল। টেবিল বহনকারী খুঁটিগুলি বাবলা কাঠ দিয়ে তৈরি করা হল এবং সোনা দিয়ে মুড়ে দেওয়া হল। আর টেবিলের জন্য খাঁটি সোনা দিয়ে তাঁরা এইসব জিনিসপত্র—থালা ও বাটি ও গামলা ও পেয়-নৈবেদ্য ঢালার জন্য কলশিগুলি তৈরি করলেন। তাঁরা খাঁটি সোনা দিয়ে দীপাধার তৈরি করলেন। পিটিয়ে পিটিয়ে তাঁরা সেটির ভিত ও হাতল তৈরি করলেন, এবং সেগুলির সাথে একই টুকরো দিয়ে ফুলের মতো দেখতে পেয়ালা, কুঁড়ি ও মুকুলগুলিও তৈরি করলেন। সেই দীপাধারের দুই ধার থেকে একদিকে তিনটি ও অন্যদিকে তিনটি—মোট ছয়টি শাখা বের করা হল। কুঁড়ি ও মুকুল সমেত কাগজি বাদামফুলের মতো দেখতে তিনটি পেয়ালা ছিল একটি শাখায়, ও অন্য তিনটি ছিল পরবর্তী শাখায় এবং দীপাধার থেকে বের হয়ে থাকা ছয়টি শাখাই একইরকম দেখতে হল। আর দীপাধারে কুঁড়ি ও মুকুল সমেত কাগজি বাদামফুলের মতো দেখতে চারটি পানপাত্র ছিল। একটি কুঁড়ি ছিল দীপাধার থেকে বের হয়ে থাকা মোট ছয়টি শাখার মধ্যে প্রথম জোড়া শাখার তলায়, দ্বিতীয় কুড়িটি ছিল দ্বিতীয় জোড়ার তলায় এবং তৃতীয় কুড়িটি ছিল তৃতীয় জোড়ার তলায়। সবকটি কুঁড়ি ও শাখা সেই দীপাধারের সঙ্গে অখণ্ড ছিল, যা খাঁটি সোনা পিটিয়ে পিটিয়ে তৈরি করা হল। খাঁটি সোনা দিয়ে তাঁরা সেটির সাতটি প্রদীপ, সেইসাথে সেটির পলতে ছাঁটার যন্ত্র ও বারকোশগুলিও তৈরি করলেন। এক তালন্ত খাঁটি সোনা দিয়ে তাঁরা সেই দীপাধার ও সেটির সব আনুষঙ্গিক উপকরণ তৈরি করলেন। ধূপ জ্বালানোর জন্য তাঁরা বাবলা কাঠ দিয়ে একটি বেদি তৈরি করলেন। এটি ছিল বর্গাকার, 45 সেন্টিমিটার করে লম্বা ও চওড়া এবং 90 সেন্টিমিটার উঁচু—এর শিংগুলি এর সাথে একই টুকরো দিয়ে গড়া হল। তাঁরা সেই বেদির চূড়া ও সবদিক এবং শিংগুলি খাঁটি সোনা দিয়ে মুড়ে দিলেন, এবং এর চারপাশে সোনার এক ছাঁচ তৈরি করলেন। তাঁরা বেদিটি বহন করার কাজে ব্যবহৃত খুঁটিগুলি ধরে রাখার জন্য সেই ছাঁচের তলায়—সামনাসামনি দুই দিকের জন্য দুটি দুটি করে—সোনার দুটি আংটা তৈরি করলেন। বাবলা কাঠ দিয়ে তাঁরা খুঁটি তৈরি করলেন ও সেগুলি সোনা দিয়ে মুড়ে দিলেন। এছাড়াও তাঁরা পবিত্র অভিষেক-তেল ও খাঁটি সুগন্ধি ধূপ তৈরি করলেন—যা হল সুগন্ধি দ্রব্যাদি প্রস্তুতকারকের হস্তকলা।