ইয়োব. 37. “এতে আমার হৃদয় চূর্ণ হচ্ছে ও স্বস্থান থেকে লাফিয়ে উঠছে। শুনুন! তাঁর কণ্ঠস্বরের গর্জন শুনুন, সেই হুংকার শুনুন যা তাঁর মুখ থেকে বের হয়। সমগ্র আকাশের নিচে তিনি তাঁর বিজলি ছেড়ে দেন ও পৃথিবীর প্রান্ত পর্যন্ত তা পাঠিয়ে দেন। তারপরে আসে তাঁর গর্জনের শব্দ; তাঁর সৌম্য স্বর দিয়ে তিনি বজ্রধ্বনি করেন। তাঁর স্বর যখন প্রতিধ্বনিত হয়, তখন তিনি কিছুই আটকে রাখেন না। ঈশ্বরের কণ্ঠস্বর অবিশ্বাস্যভাবে বজ্রধ্বনি করে; তিনি এমন সব মহৎ কাজ করেন যা আমাদের বোধের অগম্য। তিনি তুষারকে বলেন, ‘পৃথিবীতে পতিত হও,’ ও বৃষ্টিধারাকে বলেন, ‘প্রবল বর্ষণে পরিণত হও।’ যেন তাঁর নির্মিত সবাই তাঁর কাজকর্ম জানতে পারে, তিনি সব মানুষজনকে তাদের পরিশ্রম থেকে অব্যাহতি দেন। পশুরা আশ্রয়স্থলে প্রবেশ করে; তারা নিজেদের গুহার মধ্যে থেকে যায়। প্রবল ঝড় তার কক্ষ থেকে ধেয়ে আসে, শীত আসে ঝোড়ো হাওয়ার প্রভাবে। ঈশ্বরের শ্বাস বরফ উৎপন্ন করে, ও প্রশস্ত জলরাশি হিমায়িত হয়ে যায়। মেঘরাশিতে তিনি আর্দ্রতা ভরে দেন; তাদের মাধ্যমে তিনি তাঁর বিজলি ছড়িয়ে দেন। তাঁরই পরিচালনায় তারা সমগ্র পৃথিবীর বুকে ঘুরপাক খেতে খেতে তাঁর দেওয়া নির্দেশ পালন করে। তিনি মেঘরাশি সঞ্চার করে লোকজনকে শাস্তি দেন, বা তাঁর পৃথিবীকে জলসিক্ত করেন ও তাঁর প্রেম দেখান। “হে ইয়োব, আপনি একথা শুনুন; একটু থেমে ঈশ্বরের আশ্চর্য কাজকর্ম বিবেচনা করুন। আপনি কি জানেন কীভাবে ঈশ্বর মেঘরাশি নিয়ন্ত্রণ করেন ও তাঁর বিজলি চমকান? আপনি কি জানেন কীভাবে মেঘরাশি শূন্যে ঝুলে থাকে, যিনি নিখুঁত জ্ঞানবিশিষ্ট, তাঁর আশ্চর্য কাজগুলি জানেন কি? দখিনা বাতাসের চাপে জমি যখন ধামাচাপা পড়ে যায় তখন তো আপনি পোশাক গায়ে দিয়েও গরমে হাঁসফাঁস করেন, আপনি কি তাঁর সঙ্গে মিলে সেই আকাশমণ্ডলের প্রসার ঘটাতে পারেন, যা ঢালাই করা ব্রোঞ্জের আয়নার মতো নিরেট? “আমাদের বলে দিন আমরা তাঁকে কী বলব; আমাদের অজ্ঞতার কারণে আমরা আমাদের মামলাটি সাজাতে পারছি না। তাঁকে কি বলতে হবে যে আমি কথা বলতে চাই? কেউ কি কবলিত হতে চাইবে? এখন কেউ সূর্যের দিকে তাকাতে পারে না, যেহেতু তখনই তা আকাশে উজ্জ্বল হয় যখন বাতাস বয়ে আকাশ পরিষ্কার হয়ে যায়। উত্তর দিক থেকে তিনি সোনালি ঔজ্জ্বল্য নিয়ে আসেন; ঈশ্বর অসাধারণ মহিমা নিয়ে আসেন। সেই সর্বশক্তিমান আমাদের নাগালের বাইরে ও তিনি পরাক্রমে উন্নত; তাঁর ন্যায়ে ও মহা ধার্মিকতায়, তিনি অত্যাচার করেন না। তাই, লোকজন তাঁকে গভীর শ্রদ্ধা করে, কারণ যারা অন্তরে জ্ঞানী, তাদের জন্য কি তাঁর মনে কদর নেই?”