ইয়োব. 39. “তুমি কি জানো পাহাড়ি ছাগলেরা কখন শাবকের জন্ম দেয়? তুমি কি দেখেছ হরিণী কখন তার হরিণশিশু প্রসব করে? তুমি কি গুনে দেখেছ কয় মাস ধরে তারা গর্ভধারণ করে? তুমি কি তাদের প্রসবকাল জান? তারা হেঁট হয় ও শাবকের জন্ম দেয়; তাদের প্রসববেদনার অবসান হয়। তাদের শাবকেরা বেড়ে ওঠে ও ঊষর মরুভূমিতে বলবান হয়ে উঠতে থাকে; তারা সেখান থেকে চলে যায় ও আর ফিরে আসে না। “বুনো গাধাকে কে স্বাধীন হয়ে যেতে দিয়েছে? কে তাদের দড়ি খুলে দিয়েছে? পতিত জমিকে আমি তার ঘর বানিয়েছি, লবণাক্ত সমতল ভূমিকে তার আবাস করেছি। সে নগরের গোলমাল দেখে উপহাস করে; সে চালকের শব্দ শোনে না। সে পাহাড়-পর্বতকে চারণভূমি করে সেখানে চরে ও সবুজ ঘাসপাতা খুঁজে বেড়ায়। “বুনো বলদ কি তোমার সেবা করতে রাজি হবে? সে কি রাতের বেলায় তোমার জাবপাত্রের পাশে থাকবে? তুমি কি জিন পরিয়ে তাকে সীতায় আটকে রাখতে পারবে? সে কি তোমার পিছু পিছু উপত্যকায় চাষ করবে? তুমি কি তার মহাশক্তির উপর নির্ভর করবে? তুমি কি তোমার কাজের ভার তার উপর চাপিয়ে দেবে? তুমি কি তোমার শস্য টেনে আনার ও তা খামারে একত্রিত করার জন্য তার উপরে ভরসা রাখতে পারবে? “উটপাখি আনন্দের সঙ্গে তার ডানা ঝাপটায়, যদিও সারসের ডানা ও পালকের সাথে সেগুলির তুলনা করা যায় না। সে মাটিতে ডিম পাড়ে ও বালির তলায় সেগুলি গরম হতে দেয়। তার মনে থাকে না যে পায়ের চাপে হয়তো সেগুলি ভেঙে যাবে, বা কোনো বুনো পশু সেগুলি পদদলিত করে ফেলবে। সে তার শাবকদের সঙ্গে এমন রূঢ় ব্যবহার করে, যেন সেগুলি তার আপন নয়; তার পরিশ্রম ব্যর্থ হলেও তার কিছু যায় আসে না, কারণ ঈশ্বর তাকে বিজ্ঞতা দ্বারা ভূষিত করেননি বা তাকে এক ফোঁটা সৎ জ্ঞানও দেননি। তাও সে যখন দৌড়ানোর জন্য পাখা মেলে দেয়, তখন ঘোড়া ও সওয়ারকেও উপহাস করে। “তুমি কি ঘোড়াকে বল দান করেছ বা তার ঘাড়ে সাবলীল কেশর বিছিয়েছ? তুমি কি তাকে পঙ্গপালের মতো লাফানোর, সদর্প হ্রেষাধ্বনি সমেত আকর্ষণীয় সন্ত্রাস উৎপন্ন করার ক্ষমতা দিয়েছ? সে হিংস্রভাবে মাটিতে ক্ষুর ঘষে, নিজের শক্তিতে আনন্দ প্রকাশ করে, ও সংঘর্ষে ঝাঁপিয়ে পড়ে। সে ভয়কে উপহাস করে, কিছুতেই ভয় পায় না; সে তরোয়ালের সামনে থেকে পালিয়ে যায় না। তূণীর তার বিরুদ্ধে ঝংকার তোলে, বর্শা ও বল্লমও ঝলসে ওঠে। প্রমত্ত উত্তেজনায় সে মাটি খেয়ে ফেলে; যখন শিঙা বাজে তখন সে আর স্থির থাকতে পারে না। শিঙার ঝঙ্কারে সে হ্রেষাধ্বনি করে, ‘আহা!’ সে দূর থেকে যুদ্ধের গন্ধ পায়, সেনাপতিদের ও যুদ্ধরবের হুঙ্কার শোনে। “তোমার বিজ্ঞতা অনুসারেই কি বাজপাখি উড়ে যায় ও দক্ষিণ দিকে তার ডানা মেলে দেয়? তোমার আদেশানুসারেই কি ঈগল পাখি উঁচুতে ওড়ে ও উঁচুতে বাসা বাঁধে? সে খাড়া উঁচু পাহাড়ে বসবাস করে ও সেখানেই রাত কাটায়; পাথরে ভরা এবড়োখেবড়ো খাড়া এক পাহাড় তার সুরক্ষিত আশ্রয়। সেখান থেকে সে খাবারের খোঁজ করে; তার চোখ বহুদূর থেকে তা খুঁজে নেয়। তার শাবকেরা রক্ত পান করে তৃপ্ত হয়, ও যেখানে মৃতদেহ, সেও সেখানেই থাকে।”