হিতোপদেশ. 1. দাউদের ছেলে, ইস্রায়েলের রাজা শলোমনের হিতোপদেশ: প্রজ্ঞা ও শিক্ষা অর্জনের জন্য; অন্তর্দৃষ্টিমূলক কথা বোঝার জন্য; বিচক্ষণ ব্যবহারের সম্বন্ধে শিক্ষালাভের জন্য, যা কিছু যথার্থ, ন্যায্য ও সুন্দর, তা করার জন্য; অনভিজ্ঞ মানুষদের দূরদর্শিতা, অল্পবয়স্কদের জ্ঞান ও বিচক্ষণতা দানের জন্য— জ্ঞানবানেরা শুনুক ও তাদের জ্ঞান বৃদ্ধি হোক, এবং বিচক্ষণেরা পথনির্দেশনা লাভ করুক— যেন তারা নীতিবচন ও দৃষ্টান্ত, জ্ঞানবানদের বাণী ও হেঁয়ালি বুঝতে পারে। সদাপ্রভুর ভয় প্রজ্ঞার আরম্ভ, কিন্তু মূর্খেরা প্রজ্ঞা ও শিক্ষা তুচ্ছ করে। হে আমার বাছা, তোমার বাবার উপদেশ শোনো, আর তোমার মায়ের শিক্ষা ত্যাগ কোরো না। এগুলি এক ফুলমালা হয়ে তোমার মাথার শোভা বাড়াবে ও এক হার হয়ে তোমার গলাকে সাজিয়ে তুলবে। হে আমার বাছা, পাপীরা যদি তোমাকে প্রলুব্ধ করে, তুমি তাদের কথায় সম্মত হোয়ো না। তারা যদি বলে, “আমাদের সঙ্গে এসো; নির্দোষের রক্তপাত করার জন্য আমরা ওৎ পেতে থাকি, কয়েকটি নিরীহ মানুষকে মারার জন্য ঘাপটি মেরে থাকি; কবরের মতো আমরা ওদের জীবন্ত গ্রাস করি, ও মৃত্যুর খাদে পড়া মানুষের মতো তাদের পুরোপুরি গ্রাস করি; আমরা সব ধরনের মূল্যবান সামগ্রী পাব ও লুন্ঠিত দ্রব্যে আমাদের বাড়িগুলি ভরিয়ে তুলব; আমাদের সঙ্গে গুটিকাপাতের দান চালো; আমরা সবাই লুটের অর্থ ভাগাভাগি করে নেব”— হে আমার বাছা, তাদের সঙ্গে যেয়ো না, তাদের পথে পা বাড়িয়ো না; কারণ তাদের পা মন্দের দিকে ধেয়ে যায়, তারা রক্তপাত করার জন্য দ্রুতগতিতে দৌড়ায়। যেখানে প্রত্যেকটি পাখি দেখতে পায় সেখানে জাল পাতার কোনো অর্থই হয় না! এইসব লোক নিজেদের রক্তপাত করার জন্যই ওৎ পেতে থাকে; তারা শুধু নিজেদের মারার জন্যই ঘাপটি মেরে থাকে! বাঁকা পথে যারা ধন উপার্জন করতে চায় তাদের সবার এই গতিই হয়; যারা সেই ধন পায় তাদের প্রাণ সেই ধন ছিনিয়ে নেয়। পথে পথে প্রজ্ঞা চিৎকার করে বেড়ায়, প্রকাশ্য চকে সে তার সুর চড়ায়; প্রাচীরের মাথায় উঠে সে ডাক ছাড়ে, নগরের প্রবেশদ্বারে দাঁড়িয়ে সে বক্তৃতা দেয়: “তোমরা যারা অনভিজ্ঞ মানুষ, আর কত দিন তোমরা তোমাদের সরলতা ভালোবাসবে? আর কত দিন ঠাট্টা-বিদ্রুপকারীরা ঠাট্টা করে আনন্দ পাবে ও মূর্খেরা জ্ঞানকে ঘৃণা করবে? আমার ভর্ৎসনা দ্বারা অনুতপ্ত হও! তখন আমি তোমাদের কাছে আমার ভাবনাচিন্তা ঢেলে দেব, আমি তোমাদের কাছে আমার শিক্ষামালা জ্ঞাত করব। কিন্তু যখন আমি ডাকলাম তোমরা সে ডাক প্রত্যাখ্যান করেছ, ও আমি হাত বাড়িয়ে দেওয়া সত্ত্বেও কেউ মনোযোগ দাওনি, যেহেতু তোমরা আমার সব পরামর্শ উপেক্ষা করেছ ও আমার ভর্ৎসনা শুনতে চাওনি, তাই বিপর্যয় যখন তোমাদের আঘাত করবে তখন আমি হাসব; চরম দুর্দশা যখন তোমাদের নাগাল ধরে ফেলবে তখন আমি বিদ্রুপ করব— চরম দুর্দশা যখন ঝড়ের মতো তোমাদের নাগাল ধরে ফেলবে, বিপর্যয় যখন ঘূর্ণিঝড়ের মতো তোমাদের উপরে ধেয়ে আসবে, মর্মান্তিক যন্ত্রণা ও দুঃখকষ্ট যখন তোমাদের আচ্ছন্ন করবে। “তখন তারা আমাকে ডাকবে কিন্তু আমি উত্তর দেব না; তারা আমার খোঁজ করবে কিন্তু আমায় খুঁজে পাবে না, যেহেতু তারা জ্ঞানকে ঘৃণা করেছে ও সদাপ্রভুকে ভয় করতে চায়নি। যেহেতু তারা আমার পরামর্শ নিতে চায়নি ও আমার ভর্ৎসনা পদদলিত করেছে, তাই তারা নিজেদের আচরণের ফলভোগ করবে ও তাদের ষড়যন্ত্রের ফলে পরিপূর্ণ হয়ে যাবে। কারণ অনভিজ্ঞ লোকদের খামখেয়ালীপনাই তাদের হত্যা করবে, ও মূর্খদের আত্মপ্রসাদই তাদের ধ্বংস করবে; কিন্তু যে আমার কথা শোনে সে নিরাপদে বেঁচে থাকবে ও অনিষ্টের ভয় না করে স্বচ্ছন্দে থাকবে।”