হিতোপদেশ. 15. বিনীত উত্তর ক্রোধ প্রশমিত করে, কিন্তু রূঢ় কথাবার্তা ক্রোধ জাগিয়ে তোলে। জ্ঞানবানদের জিভে জ্ঞান শোভা পায়, কিন্তু মূর্খদের মুখ থেকে মূর্খতা প্রবাহিত হয়। সদাপ্রভুর চোখ সর্বত্র আছে, দুষ্ট ও সুজন, উভয়ের উপরেই তাঁর দৃষ্টি আছে। তুষ্টিকর জিভ জীবনবৃক্ষ, কিন্তু স্বেচ্ছাচারী জিভ আত্মাকে পিষে ফেলে। মূর্খ তার মা-বাবার শাসন পদদলিত করে, কিন্তু যে সংশোধনে মনযোগ দেয় সে বিচক্ষণতা দেখায়। ধার্মিকদের বাড়িতে মহাধন থাকে, কিন্তু দুষ্টদের উপার্জন সর্বনাশ ডেকে আনে। জ্ঞানবানদের ঠোঁট জ্ঞান ছড়ায়, কিন্তু মূর্খদের হৃদয় ন্যায়নিষ্ঠ নয়। সদাপ্রভু দুষ্টদের বলিদান ঘৃণা করেন, কিন্তু ন্যায়পরায়ণদের প্রার্থনা তাঁকে সন্তুষ্ট করে। সদাপ্রভু দুষ্টদের পথ ঘৃণা করেন, কিন্তু যারা ধার্মিকতার পশ্চাদ্ধাবন করে তিনি তাদের ভালোবাসেন। যে সঠিক পথ ত্যাগ করেছে তার জন্য কঠোর শাস্তি অপেক্ষা করে আছে; যে সংশোধন ঘৃণা করে সে মারা যাবে। মৃত্যু ও বিনাশ সদাপ্রভুর দৃষ্টিগোচর— তবে মানবমন আরও কত না বেশি দৃষ্টিগোচর! বিদ্রুপকারীরা সংশোধন ক্ষতিকর মনে করে, তাই তারা জ্ঞানবানদের এড়িয়ে চলে। আনন্দিত অন্তর মুখকে প্রসন্ন করে তোলে, কিন্তু মানসিক যন্ত্রণা আত্মাকে পিষে ফেলে। বিচক্ষণ অন্তর জ্ঞানের খোঁজ করে, কিন্তু মূর্খের মুখ মূর্খতার ক্ষেতে চরে। নিপীড়িতদের পক্ষে জীবনের সব দিনই বাজে, কিন্তু আনন্দিত অন্তর সর্বদাই ভোজে মেতে থাকে। অশান্তি নিয়ে মহাধন ভোগ করার চেয়ে সদাপ্রভুর ভয়ের সঙ্গে অল্প কিছু থাকাই ভালো। ঘৃণার মনোভাব নিয়ে আমিষ খাবার পরিবেশন করার চেয়ে ভালোবাসা দেখিয়ে সামান্য পরিমাণে নিরামিষ খাবার খাওয়ানো ভালো। বদরাগি লোক বিরোধ বাধিয়ে দেয়, কিন্তু ধৈর্যশীল লোক বিবাদ শান্ত করে। অলসদের পথে কাঁটার বাধা থাকে, কিন্তু ন্যায়পরায়ণদের পথ রাজপথবিশেষ। জ্ঞানবান ছেলে তার বাবার মনে আনন্দ এনে দেয়, কিন্তু মূর্খ মানুষ তার মাকে অবজ্ঞা করে। যার কোনও বুদ্ধি নেই, মূর্খতাই তাকে আনন্দ দেয়, কিন্তু যে বিচক্ষণ সে সোজা পথে চলে। পরামর্শের অভাবে সব পরিকল্পনা ব্যর্থ হয়, কিন্তু মন্ত্রণাদাতাদের সংখ্যা বেশি হলে সেগুলি সফল হয়। সঠিক উত্তর দিয়ে মানুষ আনন্দ পায়, ও সঠিক সময়ে বলা কথা কতই না প্রশংসনীয়। বিচক্ষণদের জন্য জীবনের পথ ঊর্ধ্বগামী যেন তাদের পাতালে যেতে না হয়। সদাপ্রভু অহংকারীদের বাড়ি ধূলিসাৎ করে দেন, কিন্তু বিধবাদের সীমানার পাথর তিনি স্বস্থানে অটুট রাখেন। সদাপ্রভু দুষ্টদের ভাবনাচিন্তাকে ঘৃণা করেন, কিন্তু তাঁর দৃষ্টিতে অনুগ্রহকারী কথাবার্তা বিশুদ্ধ বলে বিবেচিত হয়। লোভী মানুষেরা তাদের পরিবারে সর্বনাশ ডেকে আনে, কিন্তু যে ঘুস দেওয়া-নেওয়া ঘৃণা করে, সে জীবিত থাকে। ধার্মিকদের অন্তর এর উত্তর মাপে, কিন্তু দুষ্টদের মুখ দিয়ে অনিষ্ট প্রবাহিত হয়। সদাপ্রভু দুষ্টদের থেকে দূরে সরে থাকেন, কিন্তু তিনি ধার্মিকদের প্রার্থনা শোনেন। দূতের চোখের আলো হৃদয়ে আনন্দ এনে দেয়, ও শুভ সংবাদ অস্থির পক্ষে স্বাস্থ্যস্বরূপ। যে জীবনদানকারী সংশোধনে মনোযোগ দেয় সে জ্ঞানবানদের সঙ্গে বসবাস করবে। যারা শাসন অমান্য করে তারা নিজেদেরই ঘৃণা করে, কিন্তু যে সংশোধনে মনোযোগ দেয় সে বুদ্ধি-বিবেচনা লাভ করে। প্রজ্ঞার নির্দেশ হল সদাপ্রভুকে ভয় করা, ও সম্মানের আগে আসে নম্রতা।